তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারণা

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারণা।

ডেটা বা উপাত্তঃ সুনির্দিষ্ট ফলাফল বা আউটপুট পাওয়ার জন্য প্রসেসিংয়ে ব্যবহৃত কাঁচামাল সমুহকে ডেটা বা উপাত্ত বলে। অন্যভাবে বলা যায়- তথ্যের ক্ষুদ্রতম একককে বলা হয় উপাত্ত। Data এর অর্থ ফ্যাক্ট(Fact) যার একবচন হলো Datum। ডেটা এক বা একাধিক বর্ণ , চিহ্ন বা সংখ্যা হতে পারে।

ডেটা বা উপাত্তের প্রকারভেদ –
ইনফরমেশন বা তথ্যঃ তথ্য হলো কোন প্রেক্ষিতে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো ডেটা যা অর্থবহ এবং ব্যবহারযোগ্য। অন্যভাবে বলা যায়- ডেটা প্রক্রিয়াকরণ পরবর্তী অর্থপূর্ণ রূপ হলো ইনফরমেশন বা তথ্য। তথ্য দ্বারা কোন ব্যক্তি বা বস্তু সম্পর্কে পুর্নাঙ্গ ধারণা পাওয়া যায়। মানুষ বিভিন্ন কাজে ইনফরমেশন বা তথ্য ব্যবহার করে।

উপাত্ত ও তথ্যের উদাহরণঃ

কোন ছাত্রের প্রতিটি বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর হল ডেটা বা উপাত্ত। কিন্তু সকল বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর হিসাব করে তৈরি করা ফলাফল অর্থাৎ GPA বা রিপোর্ট হলো ঐ ছাত্রের জন্য তথ্য। আবার কলেজ কর্তৃপক্ষ যখন সকল শিক্ষার্থীর ফলাফল নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করবে তখন প্রতিটি ছাত্রের রিপোর্ট উপাত্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ একটি সিস্টেমের তথ্য অন্য একটি সিস্টেমের উপাত্ত হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

উপাত্ত ও তথ্যের মধ্যে সম্পর্কঃ উপাত্ত প্রক্রিয়া করার পর তথ্য পাওয়উপাত্ত ও তথ্যের মধ্যে পার্থক্যঃ


উপাত্ত

তথ্য


সুনির্দিষ্ট ফলাফল বা আউটপুট পাওয়ার জন্য প্রসেসিংয়ে ব্যবহৃত কাঁচামাল সমুহকে উপাত্ত বলে।

তথ্য হল কোন প্রেক্ষিতে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো ডেটা যা অর্থবহ এবং ব্যবহারযোগ্য।


তথ্যের ক্ষুদ্রতম একককে বলা হয় উপাত্ত।

ডেটাকে প্রসেস করে তথ্য পাওয়া যায়।


উপাত্ত কোন বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা প্রকাশ করে না।

তথ্য কোন বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা প্রকাশ করে।


উপাত্ত তথ্যের উপর নির্ভর করে না।

তথ্য উপাত্তের উপর নির্ভর করে।


উপাত্ত তথ্য তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।

তথ্য সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।




যোগাযোগঃ কোন যন্ত্রের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে তথ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আদান-প্রদান করাকে বলা হয় যোগাযোগ। যেমনঃ মোবাইল ফোনে কথা বলা, ইমেইল করা ইত্যাদি।

প্রযুক্তিঃ বিজ্ঞানের বিভিন্ন সূত্র প্রয়োগ করে যখন কোন কিছু উদ্ভাবন করা হয়, তখন সেই উদ্ভাবনকে বলা হয় প্রযুক্তি। যেমন- মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি হল বিভিন্ন প্রযুক্তি। অন্যভাবে বলা যায়, প্রযুক্তি হলো জ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে প্রকৌশল এবং ব্যবহারিক বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা হয়।

তথ্য প্রযুক্তিঃ তথ্য সংগ্রহ, এর সত্যতা ও বৈধতা যাচাই, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, আধুনিকরন, পরিবহন, বিতরন ও ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তি।

যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ একস্থান থেকে অন্য স্থানে নির্ভরযোগ্য ভাবে তথ্য আদান প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিই হচ্ছে যোগাযোগ প্রযুক্তি । অন্যভাবে বলা যায়, ডেটা কমিউনিকেশন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে। যেমনঃ টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি।



তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রকারভেদঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ

১। কম্পিউটিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমঃ কম্পিউটিং সহ সকল ধরণের ইলেক্ট্রনিক ডেটা প্রসেসিং; যেখানে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ও এক্সপার্ট সিস্টেম ইত্যাদির ব্যবহার করা হয়।

২। ব্রডকাস্টিংঃ রেডিও এবং টেলিভিশন যা বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে একমুখী তথ্য সম্প্রচার করে থাকে ।

৩। টেলিকমিউনিকেশনসঃ ফিক্সড টেলিফোন ও মোবাইল বা সেলুলার ফোনসহ সকল ধরণের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে উভয়মূখী ডেটা কমিউনিকেশন করে থাকে।

৪। ইন্টারনেটঃ ইন্টারনেট হলো পৃথিবী জুড়ে বিসতৃত অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমম্বয়ে গঠিত একটি বিরাট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা। ইন্টারনেট কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বলা হয়।



তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন যন্ত্রের বর্ননাঃ

মোবাইল ফোনঃ মোবাইল ফোন বা সেলুলার ফোন হল তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ। মোবাইল অর্থ ভ্রাম্যমান বা “স্থানান্তরযোগ্য”। এই ফোন সহজে যেকোনও স্থানে বহন করা এবং ব্যবহার করা যায় বলে মোবাইল ফোন নামকরণ করা হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক ষড়ভূজ আকৃতির সেল নিয়ে গঠিত বলে এটি “সেলফোন” নামেও পরিচিত। মোবাইল ফোন বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বলে অনেক বড় ভৌগোলিক এলাকায় এটি নিরবিচ্ছিন্নভাবে সংযোগ দিতে পারে।

শুধু কথা বলাই নয়, আধুনিক মোবাইল ফোন দিয়ে আরও অনেক ধরণের সেবা গ্রহন করা যায়। এর উদাহরণ হচ্ছে খুদে বার্তা -এসএমএস বা টেক্সট মেসেজ সেবা, এমএমএস বা মাল্টিমিডিয়া মেসেজ সেবা, ই-মেইল সেবা, ইন্টারনেট সেবা, ইনফ্রারেড, ব্লুটুথ সেবা, ক্যামেরা, গেমিং, ব্যবসায়িক বা অর্থনৈতিক ব্যবহারিক সফটওয়্যার ইত্যাদি। যেসব মোবাইল ফোন এইসব সেবা এবং কম্পিউটারের সাধারন কিছু সুবিধা প্রদান করে, তাদেরকে স্মার্ট ফোন নামে ডাকা হয়।

রেডিওঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি শক্তিশালী মাধ্যম হলো রেডিও। যার মাধ্যমে একমুখী তথ্য সম্প্রচার করা যায়। রেডিও কমিউনিকেশন ব্যবস্থায় শব্দকে তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গে রূপান্তরিত করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানো হয়। এই ব্যবস্থায় রেডিও ট্রান্সমিটার, রেডিও রিসিভার এবং এন্টেনা থাকে। রেডিও কমিউনিকেশন ব্যবস্থায় প্রধানত এএম, এফএম ও মাইক্রোওয়েভ ব্রডকাস্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় হলো এফএম রেডিও। AM এর পূর্নরুপ Amplitude Modulation, FM পূর্নরুপ Frequency Modulation।

টেলিভিশনঃ টেলিভিশন একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। যার মাধ্যমে একমুখী তথ্য সম্প্রচার করা যায়। এই ব্যবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে সংকেত পাঠানো হয় এবং ঐ সম্প্রচার কেন্দ্রের আওতাধীন সকলে টেলিভিশন যন্ত্রের মাধ্যমে প্রোগ্রাম দেখতে পায়। বিভিন্ন TV standards – NTSC- National Television System Committee, PAL – Phase Alternation by Line ইত্যাদি।

 


 

 

 

 

 

 


 

 

 

 

 

 

প্রথম অধ্যায় পাঠ-: ক্রায়োসার্জারি, মহাকাশ অভিযান প্রতিরক্ষা।

 

ক্রায়োসার্জারিঃ গ্রিক শব্দ ক্রাউস(kruos) থেকে ক্রায়ো (Cryo) শব্দটি এসেছে যার অর্থ বরফের মতো ঠাণ্ডা এবংসার্জারিঅর্থ শৈল্য চিকিৎসা। অর্থাৎ ক্রায়োসার্জারি হলো এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যাতে অত্যধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস কর হয়। ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপি বা ক্রায়োবায়োলেশনও  বলা হয়।

এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত অংশে হিমায়িত করার জন্য নিমোক্ত গ্যাসগুলো ব্যবহার করা হয়-

·         তরল নাইট্রোজেন

·         হিলিয়াম গ্যাস

·         আর্গন গ্যাস

·         ডাই মিথাইল ইথাইল প্রোপ্রেন ইত্যাদি।

ক্রায়োথেরাপি বা ক্রায়োসার্জারি যেভাবে কাজ করেঃ এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত কোষের তাপমাত্রা -১২০ থেকে -১৬৫ সেলসিয়াস নামিয়ে আনতে ইমেজিং যন্ত্রের সাহায্যে তরল আর্গন গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। তাপমাত্রা অত্যধিক হ্রাসের ফলে কোষের পানি জমাটবদ্ধ হয়ে টিস্যুটি বরফপিণ্ডে পরিণত হয়। ফলে রক্ত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধের কারণে টিস্যুটির ক্ষয় সাধিত হয়। পূনরায় ইমেজিং যন্ত্রের সাহায্যে কোষের ভিতরে  হিলিয়াম গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে তাপমাত্রা ২০oc থেকে ৪০oc উঠানো হয়। তখন জমাটবদ্ধ কোষ বা টিস্যুটির বরফ গলে যায় এবং কোষ বা টিস্যুটি ধ্বংস হয়ে যায়।

ক্রায়োসার্জারির ব্যবহারঃ টিউমার বা ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় এবং বেশকিছু অভ্যন্তরীণ শারীরিক ব্যাধি যেমন- লিভার ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, ওরাল ক্যান্সার ইত্যাদি। এছাড়া ত্বকের ছোট টিউমার, তিল, আচিল ইত্যাদি ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।

ক্রায়োসার্জারির সুবিধাঃ 

·         এই পদ্ধতিতে তাপমাত্রা যখন হিমাঙ্কের নিচে নামানো হয় তখন সংশ্লিষ্ট স্থান হতে রক্ত সরে যায় এবং রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় ফলে রক্তপাত হয় না বললেই চলে, হলেও খুব কম।

·         বহুল প্রচলিত কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি এবং বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের চেয়ে এই পদ্ধতির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম।

·         তাৎক্ষনিক শরীরের কোন অংশ অবশ কিংবা ব্যাথামুক্তির কাজে ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয়।

ক্রায়োসার্জারির অসুবিধাঃ 

·         এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত কোষ বা টিস্যু শনাক্ত করার সময় যদি সঠিকভাবে অবস্থান শনাক্ত করা না যায় এবং ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয় তাহলে সুস্থ কোষের ক্ষতি হতে পারে।

 

মহাকাশ অভিযানঃ মহাকাশ অভিযান হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ্ধে মহাকাশ উড্ডয়ন এবং স্থানের পরিবেশ ভৌত ধর্মাবলিকে পর্যবেক্ষণ করা। স্বয়ংক্রিয় ভাবে বা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে কিংবা নভোচারীবাহী মহাকাশযান দ্বারা মহাকাশ অভিযান পরিচলনা করা যায়। মনুষ্যবাহী নভোযান এবং মনুষ্যহীন বা রোবটিক নভোযান উভয় মাধ্যমেই এই অভিযান পরিচলনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। বিশ্বের প্রথম মানুষ বহনকারী মহাকাশযান ভস্টক-১।

মহাকাশ অভিযান এর লক্ষ্য উদ্দেশ্যঃ 

·         ১। মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে মহাশূন্যস্থিত কোন বস্তু সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়।

·         ২। মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে পৃথিবী সম্পর্কে এবং মহাকাশ সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ।

·         ৩। মহাকাশে বাণিজ্যিকভাবে পদার্থ প্রক্রিয়াকরণ উৎপাদন।

·         ৪। পৃথিবীর বাইরের পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ নতুন সীমানা আওত্তাধীন করা।

 

প্রথম অধ্যায় পাঠ-: বায়োমেট্রিক্স।

গ্রীক শব্দ “bio” যার অর্থ Life বা প্রাণ  “metric” যার অর্থ পরিমাপ করা। বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি। বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত  বৈশিষ্ট্যের  উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়।

https://i1.wp.com/www.edupointbd.com/wp-content/uploads/2017/08/Biometric-Verification-Now-Mandatory-for-Hajj.jpg?resize=640%2C240

 

বায়োমেট্রিক্স সিস্টেমে সনাক্তকরণে বিবেচিত বায়োলজিক্যাল ডেটাগুলিকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ

গঠনগত বৈশিষ্ট্যঃ

·         ১। ফেইস রিকগনিশন

·         ২। আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান

·         ৩। ফিংগার প্রিন্ট

·         ৪। হ্যান্ড জিওমিট্রি

·         ৫। ডি.এন.

আচরণগত বৈশিষ্ট্যঃ 

·         ১। ভয়েস রিকগনিশন

·         ২। সিগনেচার ভেরিফিকেশন

·         ৩। টাইপিং কীস্ট্রোক

 

বায়োমেট্রিক্স সিষ্টেম বাস্তবায়নের জন্য যা প্রয়োজনঃ

·         ১। কম্পিউটার

·         ২। ইন্টারনেট সংযোগ

·         ৩। ওয়েব ক্যামেরা

·         ৪। স্ক্যানার

·         ৫। বায়োসেন্সর ডিভাইস ইত্যাদি।

 

বায়োমেট্রিক্স মেকানিজম: এই পদ্ধতিতে প্রথমে কম্পিউটার ডেটাবেজে কোন ব্যক্তির বায়োলজিক্যাল ডেটা সংরক্ষণ করে রাখা হয়। একটি বায়োমেট্রিক্স ডিভাইস কোন ব্যক্তির গঠনগত বা আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলো ইনপুট নিয়ে ডিজিটাল কোডে রুপান্তর করে এবং এই কোডকে কম্পিউটারে সংরক্ষিত কোডের সাথে তুলনা করে যদি ব্যবহারকারীর  ব্যক্তিগত  কোড কম্পিউটার ডেটাবেজে সংরক্ষিত কোডের সাথে মিলে যায় তবে তাকে ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দেয় বা সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

 

ফেইস রিকগনিশন: ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যার সাহায্যে মানুষের মুখের গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে সনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতিতে কোন ব্যবহারকারীর মুখের ছবিকে কম্পিউটারে সংরক্ষিত ছবির সাথে দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব, নাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস, চোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি তুলনা করার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়।

https://i0.wp.com/www.edupointbd.com/wp-content/uploads/2017/08/antifacial-recognition-887x488.jpg?resize=405%2C223 https://i0.wp.com/www.edupointbd.com/wp-content/uploads/2017/08/Telpo-TPS980-face-recognition-machine.jpg?resize=300%2C225

সুবিধাঃ

·         ১। ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম সহজে ব্যবহারযোগ্য।

·         ২। এই পদ্ধতিতে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।

অসুবিধাঃ

·         ১। ক্যামেরা ছাড়া এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় না এবং আলোর পার্থক্যের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

·         ২। মেকআপ ব্যবহার, গহনা ব্যবহার ইত্যাদির কারণে অনেক সময় সনাক্তকরণে সমস্যা হয়।

ব্যবহারঃ

·         ১। কোন বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে।

·         ২। কোন আইডি নম্বর সনাক্তকরণে

 চোখের আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান: বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে সনাক্তকরনের জন্য চোখের আইরিসকে আদর্শ অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একজন ব্যক্তির চোখের আইরিস এর সাথে অন্য ব্যক্তির চোখের আইরিস এর প্যাটার্ন সবসময় ভিন্ন হয়। আইরিশ সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে চোখের চারপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় বিশ্লেষণ পরীক্ষা করা হয় এবং রেটিনা স্কান পদ্ধতিতে চোখের পিছনের অক্ষিপটের মাপ রক্তের লেয়ারের পরিমাণ বিশ্লেষণ পরিমাপ করা হয়। উভয় পদ্ধতিতে চোখ মাথাকে স্থির করে একটি ডিভাইসের সামনে দাড়াতে হয়।

https://i1.wp.com/www.edupointbd.com/wp-content/uploads/2017/08/galaxy-s7-lg-g5-iris-scanner.jpg?resize=640%2C322

সুবিধাঃ

·         ১। সনাক্তকরণে খুবই কম সময় লাগে।

·         ২। সনাক্তকরণে ফলাফলের সূক্ষ্মতা তুলনামুলকভাবে অনেক বেশি।

·         ৩। এটি একটি উচ্চ নিরাপত্তামূলক সনাক্তকরণ ব্যবস্থা যা স্থায়ী।

অসুবিধাঃ 

·         ১। এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

·         ২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।

·         ৩। ডিভাইস ব্যবহারের সময় চশমা খোলার প্রয়োজন হয়।

ব্যবহারঃ 

·         ১। এই পদ্ধতির প্রয়োগে পাসপোর্টবিহীন এক দেশের সীমা অতিক্রম করে অন্য দেশে গমন করা যেতে পারে যা বর্তমানে ইউরোপে ব্যবহৃত হচ্ছে।

·         ২। এছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ কাজে ব্যবহার করা হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ফিঙ্গার প্রিন্টঃ প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ পৃথক। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমেই আঙ্গুলের ছাপ ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয় এবং পরবর্তীতে ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার এর মাধ্যমে আঙ্গুলের ছাপ ইনপুট নিয়ে ডেটাবেজে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপের সাথে তুলনা করে কোন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়।

ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার হচ্ছে বহুল ব্যবহৃত একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইস যার সাহায্যে মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ইনপুট হিসাবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়

https://i2.wp.com/www.edupointbd.com/wp-content/uploads/2017/08/access-control-biometric-system-500x500-250x250.jpg?resize=250%2C250

সুবিধাঃ

·         ১। খরচ তুলনামূলক কম।

·         ২। সনাক্তকরণের জন্য সময় কম লাগে।

·         ৩। সূক্ষ্মতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।

অসুবিধাঃ 

·         ১। আঙ্গুলে কোন প্রকার আস্তর লাগানো থাকলে সনাক্তকরণে সমস্যা হয়।

·         ২। ছোট বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয়।

ব্যবহারঃ 

·         ১। কোন প্রোগ্রাম বা ওয়েবসাইটে ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার।

·         ২। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ

·         ৩। ব্যাংকিং পেমেন্ট সিস্টেমে।

·         ৪। ডিএনএ সনাক্ত করার কাজে।

 

হ্যান্ড জিওমিট্রিঃ প্রতিটি মানুষের হাতের আকৃতি জ্যামিতিক গঠনেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। বায়োমেট্রিক ডিভাইস দ্বারা হ্যান্ড জিওমিট্রি পদ্ধতিতে মানুষের হাতের আকৃতি বা জ্যামিতিক গঠন হাতের সাইজ ইত্যাদি নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষকে সনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতিতে  হ্যান্ড জিওমেট্রি  রিডার হাতের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, পুরুত্ত ইত্যাদি পরিমাপ করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত হ্যান্ড জিওমেট্রির সাথে তুলনা করে ব্যক্তি সনাক্ত করে

https://i1.wp.com/www.edupointbd.com/wp-content/uploads/2017/08/hand-geometry-reader-scanning.jpg?resize=640%2C363

সুবিধাঃ 

·         ১। ব্যবহার করা সহজ।

·         ২। সিস্টেমে অল্প মেমোরির প্রয়োজন।

অসুবিধাঃ 

·         ১। ডিভাইস গুলোর দাম তুলনামূলক বেশি।

·         ২। ফিংগার প্রিন্ট এর চেয়ে ফলাফলের সূক্ষ্মতা কম।

ব্যবহারঃ 

·         ১। এয়ারপোর্টের আগমন-নির্গমন নিয়ন্ত্রণ

·         ২। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবীদের উপস্থিতি নির্ণয়ে।

·         ৩। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং লাইব্রেরিতে।

 

ডিএনএঃ ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং এর সাহায্যে মানুষ চেনার বিষয়টি অনেক বেশি বিজ্ঞান সম্মত। কোন মানুষের দেহ কোষ থেকে ডিএনএ আহরণ করার পর তার সাহায্যেই কতিপয় পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতি অনুসারে মানুষের ডিএনএ ফিংগার প্রিন্ট তৈরি করা হয়। মানব দেহের রক্ত, চুল, একবার বা দুবার পরা জামা কাপড় থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা যায়।

সুবিধাঃ 

·         ১। পদ্ধতিগত কোন ভূল না থাকলে সনাক্তকরণে সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।

অসুবিধাঃ

·         ১। ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং তৈরি সনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে।

·         ২। ডিএনএ প্রোফাইলিং করার সময় পদ্ধতিগত ভূল ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং এর ভূলের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

·         ৩। সহোদর যমজদের ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।

·         ৪। তুলনামূলক খরচ বেশি।

ব্যবহারঃ 

·         ১। অপরাধী সনাক্তকরণে

·         ২। পিতৃত্ব নির্ণয়ে

·         ৩। বিকৃত শবদেহ শনাক্তকরণে

·         ৪। লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশ বৃদ্ধির জন্য

·         ৫। চিকিৎসা বিজ্ঞানে

 

ভয়েস রিকোগনিশনঃ ভয়েস রিকোগনিশন পদ্ধতিতে সকল ব্যবহারকারীর কন্ঠকে, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর সাহায্যে ইলেক্ট্রিক সিগন্যালে রুপান্তর করে প্রথমে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয় এবং একজন ব্যবহারকারীর কণ্ঠকে ডেটাবেজে সংরক্ষিত ভয়েস ডেটা ফাইলের সাথে তুলনা করে কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।

সুবিধাঃ 

·         ১। সহজ কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য সনাক্তকরণ পদ্ধতি।

অসুবিধাঃ 

·         ১। অসুস্থতা জনিত কারনে কোন ব্যবহারকারীর কন্ঠ পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে অনেক সময় সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না।

·         ২। সূক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে কম।

ব্যবহারঃ 

·         ১। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

·         ২। টেলিফোনের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভয়েস রিকোগনিশন সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

·         ৩। টেলিকমিউনিকেশন সিস্টমের নিরাপত্তায়।

 

সিগনেচার ভেরিফিকেশনঃ সিগনেচার ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে হাতে লেখা স্বাক্ষরকে পরীক্ষা করা হয়। এই পদ্ধতিতে স্বাক্ষরের আকার, লেখার গতি, লেখার সময় এবং কলমের চাপকে পরীক্ষা করে ব্যবহারকারীর স্বাক্ষর সনাক্ত করা হয়। একটি স্বাক্ষরের সকল প্যারামিটার ডুপ্লিকেট করা সম্ভব নয়। এই পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরণের একটি কলম এবং প্যাড বা টেবলেট পিসি

সুবিধাঃ 

·         ১। ইহা একটি সর্বস্থরের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।

·         ২। এই পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ কম।

·         ৩। সনাক্তকরণে কম সময় লাগে।

অসুবিধাঃ

·         ১। যারা স্বাক্ষর জানে না তাদের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না।

ব্যবহারঃ 

·         ১। ব্যাংক-বীমা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাক্ষর সনাক্তকরণের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

বায়োমেট্রিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহঃ

·         ১। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ

·         ২। অফিসের সময় উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ

·         ৩। পাসপোর্ট তৈরি

·         ৪। ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি

·         ৫। ব্যাংকের লেনদেন নিরাপত্তায়

·         ৬। ATM বুথে নিরাপত্তায়

·         ৭। আবাসিক নিরাপত্তায়

·         ৮। কম্পিউটার ডাটাবেজ নিয়ন্ত্রণ

 

 

 

প্রথম অধ্যায় পাঠ-: বায়োইনফরমেটিক্স জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।

বায়োইনফরমেটিক্সঃ বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে জীন তথা DNA সংক্রান্ত গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ডেটাগুলো (ডিএনএ সিকোয়েন্স, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি) ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তিতে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে এই ডেটাগুলো এনালাইসিস করে বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল সমস্যার সমাধান এবং নতুন টুলস তৈরি করা হয়। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞানী ডোনাল্ড নুথ(Donald Knuth) সর্বপ্রথম বায়োইনফরমেটিক্সের ধারণা দেন।

বায়োইনফরমেটিক্স এর উদ্দেশ্য: 

·         ১। জৈবিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুধাবন করা। অর্থাৎ জীন বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান করে জ্ঞান তৈরি করা।

·         ২। রোগ-বালাইয়ের কারণ হিসেবে জীনের প্রভাব সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ করা।

·         ৩। ঔষধের গুণাগুণ উন্নত নতুন ঔষধ আবিষ্কারের প্রচেষ্টা করা।

 

একটি বায়োইনফরমেটিক্স টুলস তিনটি প্রধান প্রক্রিয়া করে থাকে:  

·         ১। ডিএনএ সিকোয়েন্স প্রোটিন সিকোয়েন্স নির্ণয় করে (DNA sequence determines protein sequence )

·         ২। প্রোটিন সিকোয়েন্স প্রোটিন গঠন/ কাঠামো নির্ণয় করে (Protein sequence determines protein structure)

·         ৩। প্রোটিন গঠন/ কাঠামো প্রোটিনের কাজ নির্ণয় করে (Protein structure determines protein function)

 

 

বায়োইনফরমেটিক্স এর ব্যবহার:

·         ১। প্যাটার্ন রিকগনিশন

·         ২। ডেটা মাইনিং

·         ৩। মেশিন ল্যাংগুয়েজ  অ্যালগোরিদম

·         ৪। ভিজুয়ালাইজেশন

·         ৫। সিকুয়েন্স এলাইনমেন্ট

·         ৬। ডিএনএ ম্যাপিং

·         ৭। ডিএনএ এনালাইসিস

·         ৮। জিন ফাইন্ডিং

·         ৯। জিনোম সমাগম

·         ১০। ড্রাগ নকশা

·         ১১। ড্রাগ আবিস্কার

·         ১২। প্রোটিনের গঠন

 

বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ওপেনসোর্স সফটওয়্যার সামগ্রীঃ 

Bioconductor, BioPerl, Biopython, BioJava, BioRuby, Biclipse, EMBOSS,Taverna Workbench, UGENE ইত্যাদি।

 

জেনেটিক  ইঞ্জিনিয়ারিংঃ জীব অর্থাৎ প্রাণী বা উদ্ভিদের ক্ষুদ্রতম একক হলো কোষ। কোষের প্রাণকেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। নিউক্লিয়াসের ভিতরে বিশেষ কিছু পেঁচানো বস্তু থাকে যাকে ক্রোমোজোম বলা হয়। ক্রোমোজোমের মধ্যে আবার চেইনের মত পেঁচান কিছু বস্তু থাকে যাকে DNA(Deoxyribo Nucleic Acid) বলা হয়। এই DNA অনেক অংশে ভাগ করা থাকে। এক একটি নির্দিষ্ট অংশকে জীন বলা হয়। এই জীন প্রাণী বা উদ্ভিদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে। অর্থাৎ প্রাণী বা উদ্ভিদের বিকাশ কীভাবে হবে, আকৃতি কীরুপ হবে তা কোষের DNA সিকোয়েন্সে সংরক্ষিত থাকে।

কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশন (genetic modification /manipulation-GM) বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য যে পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় তাকে রিকম্বিনেন্ট DNA (DeoxyriboNucleic Acid) – প্রযুক্তি বা জিন ক্লোনিং বলা হয়।  ১৯৭২ সালে Paul Berg বানরের ভাইরাস SV40  lambda virus এর DNA এর সংযোগ ঘটিয়ে বিশ্বের প্রথম রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ অণু তৈরি করেন। এই জন্য Paul Berg কে জেনেটিক  ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে কোষের জেনেটিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কোষ তৈরি করা যায়। যেমনঃ ধরা যাক একটি আমের জাত উচ্চফলনশীল কিন্তু স্বাদে মিষ্টি কম। অপরদিকে অপর একটি আমের জাত কমফলনশীল কিন্তু স্বাদে অনেক মিষ্টি। এক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে উচ্চফলনশীল আমের জিনের সাথে মিষ্টি আমের জিনের সংমিশ্রণে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উচ্চফলনশীল মিষ্টি আম উৎপন্ন করা যায়।

 

 

 

 

রিকমবিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ধাপসমূহঃ  

১। DNA নির্বাচন

২। DNA এর বাহক নির্বাচন

৩। DNA খণ্ড কর্তন

৪। খণ্ডনকৃত DNA প্রতিস্থাপন

৫। পোষকদেহে রিকম্বিনেন্ট DNA স্থানান্তর

৬। রিকম্বিনেন্ট DNA এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মূল্যায়ন।

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহারঃ 

এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কৃষি খাতে। কৃষি গবেষণায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই পর্যন্ত অনেক ট্রান্সজেনিক ফসল  আবিষ্কার করা হয়েছে। তার মধ্যে উন্নত প্রজাতির ধান উল্লেখযোগ্য। এই প্রযুক্তির সুষ্ঠ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের খাদ্য সমস্যা অনেকটা দূর করা সম্ভব। এছাড়া নিম্ল লিখিত কাজে ব্যবপভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যথাঃ

১। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা

২। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা

৩। পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা

৪। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো

এই রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তি সবচেয়ে সফলভাবে আমূল পরিবর্তন এনেছিল ইনসুলিন  উৎপাদনে। আমরা জানি যে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন একটা অপরিহার্য উপাদান। ইনসুলিন মানুষের অগ্ন্যাশয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের এই হরমোনটি কম থাকে বলে, তাদের কৃত্রিমভাবে ইনসুলিন নিতে হয়। তো, আগে রোগীদের জন্য এই ইনসুলিন সরবরাহ করা হতো শূকর থেকে। শূকর হত্যা করে ইনসুলিন সংগ্রহ করতে হতো তখন।

এরপর রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদন শুরু হয়। এক্ষেত্রে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া  ব্যবহার করে কম খরচে অধিক পরিমাণ ইনসুলিন উৎপাদন সম্ভব হয়। এই প্রক্রিয়ায়, মানুষের শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকারী জিনটি এনজাইম দ্বারা কর্তন করে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএতে স্থাপন করা হয় এবং ল্যাবরেটরিতে ইলোকাই ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার করানো হয়। ওই ট্রান্সজেনিক ইকোলাই ব্যাকটেরিয়াগুলোই ইনসুলিন উৎপাদন করে।

এছাড় উন্নতমানের ফসল উৎপাদন, রোগের চিকিৎসা, হরমোন তৈরি, ভাইরাসনাশক, মৎস্য উন্নয়ন, ফারমাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন, টিকা জ্বালানি তৈরি, জেনেটিক ত্রুটিসমূহ নির্ণয়, পরিবেশ সুরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষতিকর দিকগুলোঃ 

·         ১। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ  যদি কোন কারণে ক্ষতিকর হয়ে পড়ে তাহলে এর প্রভাবে জীব জগতে বিপর্যয় নেমে আসবে।

·         ২। নিবেশিত জিন যদি ক্ষতিকর প্রোটিন সংশ্লেষণ করে তাহলে ক্যান্সার সহ নতুন রোগ হতে পারে।

 

 

প্রথম অধ্যায় পাঠ-: ন্যানো টেকনোলজি।

 

ন্যানো টেকনোলজিঃ পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞানকে ন্যানো টেকনোলজি বলে। ন্যানো শব্দটি  গ্রিক nanos শব্দ থেকে এসেছে যার আভিধানিক অর্থ  dwarftরিচার্ড ফাইনম্যান (Richard Feynman) কে ন্যানো প্রযুক্তির জনক বলা হয়।

ন্যানো হলো একটি পরিমাপের একক। মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগকে বলা হয়   ন্যানো মিটার।                    অর্থাৎ 1 nm = 10-9  আর এই ন্যানোমিটার স্কেলে যে সমস্ত টেকনোলজি সম্পর্কিত সেগুলোকেই ন্যানো টেকনোলজি বলে।

 

ন্যানো টেকনোলজির প্রয়োগক্ষেত্রঃ

·         ১। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার তৈরিতে

·         ২। ন্যানো রোবট তৈরিতে

·         ৩। ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি তৈরিতে

·         ৪। জালানি তৈরিতে

·         ৫। খাদ্যজাত পণ্যের প্যাকেজিং প্রলেপ তৈরিতে

·         ৬। ঔষধ তৈরিতে

·         ৭। খেলাধুলার সামগ্রী তৈরিতে

·         ৮। বস্ত্র শিল্পে

·         ৯। কৃত্তিম অঙ্গ-পতঙ্গ তৈরিতে

 

ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা অসুবিধাঃ 

সুবিধাঃ

·         ১। বেশি টেকসই বা স্থায়ী, আকারে তুলনামূলক ছোট এবং ওজনে হালকা।

·         ২। ন্যানো টেকনোলজির প্রয়োগে উৎপাদিত ঔষধ স্মার্ট ড্রাগ ব্যবহার করে দ্রুত আরগ্য লাভ করা যায়।

·         ৩। খাদ্যজাত পণ্যের প্যাকেজিং এর সিলভার তৈরির কাজে।

·         ৪। ন্যানো ট্রান্সজিস্টর, ন্যানো ডায়োড, প্লাজমা ডিসপ্লে ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে ইলেকট্রনিক শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হচ্ছে।

·         ৫। ন্যানো প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি ব্যাটারি, ফুয়েল সেল,  সোলার সেল ইত্যাদির মাধ্যমে সৌরশক্তিকে অধিক্তর কাজে লাগানো যায়।

অসুবিধাঃ 

·         ১। ন্যানো টেকনোলজি ব্যয়বহুল। ফলে এই প্রযুক্তির প্রয়োগে উৎপাদিত পন্য ব্যয়বহুল।

·         ২। ন্যানোপারটিকেল মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

 

 

প্রথম অধ্যায় পাঠ-১০: ICT ব্যবহারে নৈতিকতা, সমাজ জীবনে ICT এর প্রভাব, ICT অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

যে কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ব্যক্তির নৈতিকতার বিষয়ে নিম্নলিখিত নিয়মসমূহ মেনে চলা উচিৎঃ 

·         ১। প্রতিষ্ঠানের সকল গোপনীয় তথ্যের গোপনীয়তা এবং বিশ্বস্ততা রক্ষা করা।

·         ২। কোন তথ্যের ভুল উপস্থাপন না করা।

·         ৩। অনুমোদন ছাড়া চাকুরিদাতার সম্পদ ব্যবহার না করা।

·         ৪। অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে চ্যাট বা ইন্টারনেট ব্রাউজ করে অযথা সময় নষ্ট না করা।

·         ৫। ইন্টারনেটে অন্যের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন না করা।

·         ৬। ভাইরাস ছড়ানো, স্প্যামিং ইত্যাদি কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করা।

 

একজন সুনাগরিকের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে যে নৈতিকতা মেনে চলা উচিৎঃ  

·         ১। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজের দক্ষতা জ্ঞান কাজে লাগিয়ে জনগণকে সাহায্য করা।

·         ২। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং নীতিমালা মেনে চলা।

·         ৩। জনগণের সমস্যার কারণ হয় এমন কোন তথ্যের ভুল উপস্থাপন না করা।

·         ৪। ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য অবৈধভাবে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার না করা।

 

কম্পিউটার ইথিকস এর বিষয়ে দশটি নির্দেশনাঃ 

·         ১। অন্যের ক্ষতি করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার না করা।

·         ২। অন্য ব্যক্তির কম্পিউটারের কাজের উপর হস্তক্ষেপ না করা।

·         ৩। অন্য ব্যক্তির ফাইলসমূহ হতে গোপনে তথ্য সংগ্রহ না করা।

·         ৪। চুরির উদ্দেশ্যে কম্পিউটার  ব্যবহার না করা।

·         ৫। মিথ্যা সাক্ষ্য প্রমাণ বহনের জন্য কম্পিউটারকে ব্যবহার না করা।

·         ৬। পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা।

·         ৭। অনুমতি ব্যতিরেকে অন্যের কম্পিউটার রিসোর্স ব্যবহার না করা

·         ৮। অন্যের বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত ফলাফলকে আত্নসাৎ না করা।

·         ৯। প্রোগ্রাম লেখার পূর্বে সমাজের উপর তা কী ধরণের প্রভাব ফেলবে সেটি চিন্তা করা।

·         ১০। কম্পিউটারকে ওই সব উপায়ে ব্যবহার করা যেন তা বিচার বিবেচনা শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।

 

সফটওয়্যার পাইরেসিঃ সফটওয়্যার পাইরেসি বলতে অনুমোদিত মালিক বা প্রস্তুতকারীর বিনা অনুমতিতে কোন সফটওয়্যার কপি করা, ব্যবহার করা, নিজের নামে বিতরণ করা কিংবা কোন প্রকার পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া ইত্যাদি কার্যক্রমকে বুঝায়।

সাইবার ক্রাইমঃ ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে যে সকল কম্পিউটার ক্রাইম সংঘটিত হয় তাদেরকে বুঝায়।

সাইবার আক্রমণঃ সাইবার আক্রমণ এক ধরণের ইলেক্ট্রনিক আক্রমণ যাতে ক্রিমিনালরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য কারও সিস্টেমে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে ফাইল, প্রোগ্রাম কিংবা হার্ডওয়্যার ধ্বংস বা ক্ষতি সাধন করে।

হ্যাকিংঃ সাধারণত হ্যাকিং একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কেউ কোন বৈধ অনুমতি ব্যতীত কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। যারা হ্যাকিং করে তারা হচ্ছে হ্যাকার। মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, গাড়ি ট্র্যাকিং, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স  ডিজিটাল যন্ত্র বৈধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে তা হ্যাকিং এর আওতায় পড়ে।  হ্যাকাররা সাধারনত এসব ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের ত্রুটি বের করে তা দিয়েই হ্যাক করে। হ্যাকারদের চিহ্নিত করা হয় Hat বা টুপি দিয়ে। তিন প্রকারের হ্যকার রয়েছে। যথাঃ

·         ১। White hat hacker

·         ২। Grey hat hacker

·         ৩। Black hat hacker

White hat hacker: একজন white hat hacker  একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করে এবং সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিককে ত্রুটির বিষয়ে দ্রুত অবহতি করে। সিকিউরিটি সিস্টেমটি হতে পারে একটি কম্পিউটার, একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, একটি ওয়েবসাইট, একটি সফটওয়্যার ইত্যাদি।

Grey hat hacker: একজন Grey hat hacker যখন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো খুজে বের  করে তখন সে তার মন মত কাজ করে। সে ইচ্ছে করলে সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিককে ত্রুটি জানাতে পারে অথবা তথ্য নিজের স্বার্থের জন্য ব্যবহারও করতে পারে। বেশির ভাগ হ্যকার ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে।

Black hat hacker: একজন  Black hat hacker যখন কোন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি খুজে বের করে, তখন দ্রুত ত্রুটি কে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়। অর্থাৎ সিস্টেমটি নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নেয় অথবা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সিস্টেমটি নষ্ট করে দেয়।

স্প্যাম: -মেইল একাউন্টে প্রায়ই কিছু কিছু অচেনা অপ্রয়োজনীয় -মেইল পাওয়া যায় যা আমাদের বিরক্তি ঘটায়। এই ধরণের -মেইলকে সাধারণত স্প্যাম মেইল বলে। যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট  কোন একটি ইমেইল অ্যাড্রেসে শতশত এমনকি লক্ষ লক্ষ মেইল প্রেরণের মাধ্যমে সার্ভারকে ব্যস্ত বা সার্ভারের পারফর্মেন্সের ক্ষতি করে বা মেমোরি দখল করার এই পদ্ধতিকে স্প্যামিং বলে।

স্পুফিং: স্পুফিং শব্দের অর্থ হলো প্রতারনা করা, ধোঁকা দেওয়া। নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির ক্ষেত্রে স্পুফিং হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে কোন ব্যক্তি বা কোন একটি প্রোগ্রাম মিথ্যা বা ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে বিভ্রান্ত করে এবং এর সিকিউরিটি সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে অনৈতিকভাবে সুবিধা আদায় করে।

ফিশিং( Phishing): ইন্টারনেট ব্যবস্থায় কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট সেজে প্রতারণার মাধ্যমে কারো কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ব্যবহারকারী নাম পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করাকে ফিশিং বলে। ইমেইল ইন্সট্যান্ট মেসেজের মাধ্যমে সাধারণত ফিশিং করা হয়ে থাকে। প্রতারকেরা তাদের শিকারকে কোনোভাবে ধোঁকা দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। ওয়েবসাইটটি সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর ইমেইল, ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ডের আসল ওয়েবসাইটের চেহারা নকল করে থাকে। ব্যবহারকারীরা সেটাকে আসল ওয়েবসাইট ভেবে নিজের তথ্য প্রদান করলে সেই তথ্য প্রতারকদের হাতে চলে যায়।

ভিশিং(Vishing): মোবাইল, টেলিফোন, ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন ফোন বা অডিও ব্যবহার করে ফিশিং করাকে ভিশিং বা ভয়েস ফিশিং বলা হয়। যেমনঃ ফোনে লটারী বিজয়ের কথা বলে এবং টাকা পাঠানোর কথা বলে ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া।

প্লেজিয়ারিজম( Plagiarism ): কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোন সাহিত্য, গবেষণা বা সম্পাদনা কর্ম হুবহু নকল বা আংশিক পরিবর্তন করে নিজের নামে প্রকাশ করাই হলো প্লেজিয়ারিজম।

 

সমাজ জীবনে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাবঃ 

·         ১। খুব সহজে তথ্য পাওয়া যায়।

·         ২। পৃথিবীর যেকোন স্থানে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা যায়।

·         ৩। জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে।

·         ৪। মানুষের কাজের দক্ষতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

·         ৫। ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হয়েছে ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

·         ৬। চিকিৎসা ক্ষেত্রে সেবা পাওয়া সহজ হয়েছে।

·         ৭। শিক্ষা গ্রহণ বা প্রদান করা সহজতর হয়েছে।

সমাজ জীবনে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবঃ 

·         ১। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় যুবক বা বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের বিপথগামী হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

·         ২। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নষ্ট হচ্ছে।

·         ৩। মানুষ যন্ত্রনির্ভর হওয়ায় বেকারত্ব বেড়ে যাচ্ছে ফলে অপরাধ কর্ম বেশি সংঘঠিত হচ্ছে।

·         ৪। ভিনদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনে দেশি সংস্কৃতি হারাতে চলছে।

·         ৫। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ফলে বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে।

 

 

প্রথম অধ্যায়: জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তরসমূহ।

ডেটা বা উপাত্ত কী?

সুনির্দিষ্ট ফলাফল বা আউটপুট পাউয়ার জন্য প্রসেসিংয়ে ব্যবহৃত কাঁচামাল সমুহকে ডেটা বা উপাত্ত বলে। অন্যভাবে বলা যায়- তথ্যের ক্ষুদ্রতম একককে বলা হয় উপাত্ত।

তথ্য কী?

তথ্য হল কোন প্রেক্ষিতে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো ডেটা যা অর্থবহ এবং ব্যবহারযোগ্য। অন্যভাবে বলা যায়- ডেটা প্রক্রিয়াকরণ পরবর্তী অর্থপূর্ণ রূপ হলো ইনফরমেশন বা তথ্য। তথ্য দ্বারা কোন ব্যক্তি বা বস্তু সম্পর্কে পুর্নাঙ্গ ধারণা পাওয়া যায়।

তথ্য প্রযুক্তি কী?

তথ্য সংগ্রহ, এর সত্যতা বৈধতা যাচাই, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, আধুনিকরন, পরিবহন, বিতরন ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তি।

যোগাযোগপ্রযুক্তি কী?

একস্থান থেকে অন্য স্থানে নির্ভরযোগ্য ভাবে তথ্য আদান প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিই হচ্ছে যোগাযোগ প্রযুক্তি অন্যভাবে বলা যায়, ডেটা কমিউনিকেশন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে। যেমনঃ টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি।

গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম কী?

বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যেমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে

-মেইল কী?

-মেইল হচ্ছে ইলেকট্রনিক মেইল অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক যন্তপাতি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে বার্তা আদান-প্রদান করার পদ্ধতি হচ্ছে -মেইল।

ভিডিও কনফারেন্সিং কী?

বিভিন্ন  ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থান করে ব্যক্তিবর্গ কমিউনিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও এর যুগপৎ উভমুখী স্থানান্তরের মাধ্যমে যোগাযোগ বা সভা কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশল হলো ভিডিও কনফারেন্সিং। স্কাইপী , ফেসবুক মেসেঞ্জার ইত্যাদির মাধ্যমে খুব সহজেই ভিডিও কনফারেন্সিং করা যায়।

টেলিকনফারেন্সিং কী?

বিভিন্ন  ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থান করে টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি যেমন টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি ব্যবহার করে সভা কার্যক্রম পরিচালনা করার কৌশল হলো টেলিকনফারেন্সিং।

আউটসোর্সিং কী?

কোন প্রতিষ্ঠানের কাজ নিজেরা না করে তৃতীয় কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে করিয়ে নেওয়াকে বলা হয় আউটসোর্সিং।

ফ্রিল্যান্সিং কী?

কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে, স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং।

দূরশিক্ষণ বা ডিসটেন্স লার্নিং বা -লার্নিং কী?

শিক্ষা গ্রহনের জন্য কোন শিক্ষার্থীকে গ্রাম থেকে শহরে কিংবা একদেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হয় না। অপরদিকে শিক্ষকও ঘরে বসেই শিক্ষা দান করতে পারে। এমনকি একজন শিক্ষার্থী অনলাইনেই পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে যাচাই করতে পারে এবং ঘরে বসেই ফলাফল দেখতে পারে। এতে সময়, অর্থ, পরিশ্রম সাশ্রয় হয়। এই ধারণাকে বলা হয় দূরশিক্ষণ বা ডিসটেন্স লার্নিং বা -লার্নিং।

টেলিমেডিসিন কী?

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে কোন ভৌগলিক ভিন্ন দূরত্বে অবস্থানরত রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক , রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়।

অফিস অটোমেশন কী?

তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে অফিসের সার্বিক কার্যক্রমের (প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরি সংরক্ষন, কর্মকর্তা কর্মচারিদের মধ্যে অভ্যন্তরীন বহিঃযোগাযোগ ইত্যাদি) বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ তথা বাস্তবায়ন কার্যক্রম দক্ষতার সাথে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যায়। এই ধরণের প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রমকে বলা হয় অফিস অটোমেশন।

স্মার্ট হোম বা হোম অটোমেশন কী?

স্মার্ট হোম এমন একটি বাসস্থান যেখানে রিমোট কন্ট্রোলিং এর সাহায্যে যেকোনো স্থান থেকে কোন বাড়ির সিকিউরিটি কন্ট্রোল সিস্টেম, হিটিং সিস্টেম, কুলিং সিস্টেম, লাইটিং সিস্টেম, বিনোদন সিস্টেমসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্মার্ট হোমকে হোম অটোমেশন সিস্টেমও বলা হয়।

-কমার্স কী?

ইলেকট্রনিক কমার্স বা -কমার্স একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় বা লেনদেন হয়ে থাকে। কিছু -কমার্স প্লাটফর্ম এর উদাহরণ- alibaba.com, amazon.com, daraz.com.bd rokomari.com ইত্যাদি। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী?

হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার সমন্বয়ে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক বা ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক রুপায়ন হল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য বাস্তব বলে মনে হয়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী?

মানুষ যেভাবে চিন্তা ভাবনা করে, কৃত্তিম উপায়ে যদি কোন যন্ত্রকে সেভাবে চিন্তা ভাবনা করানো যায়, তখন সেই যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তাকে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বলে।

রোবটিক্স কী?

প্রযুক্তির যে শাখায় রোবটের নকশা বা ডিজাইন, গঠন, পরিচালন প্রক্রিয়া, কাজ প্রয়োগক্ষেত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, সেই শাখাকে রোবোটিক্স বলা হয়।

রোবট কী?

রোবট হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এক ধরণের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা কোন ব্যক্তির নির্দেশে কাজ করতে পারে। এটি তৈরী হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিতে।

এক্সপার্ট সিস্টেম কী?

এক্সপার্ট সিস্টেম হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এমন একটি সিস্টেম যা মানুষের চিন্তা ভাবনা করার দক্ষতা এবং সমস্যা সমাধানের সক্ষমতাকে একত্রে ধারণ করে। যা মানব মস্তিস্কের মত পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সর্বোচ্চ সাফল্য লাভের উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

ক্রায়োসার্জারি কী?

ক্রায়োসার্জারি হল এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যধিক শীতল  তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস করে। গ্রিক শব্দক্রায়োঅর্থ বরফের মতো ঠাণ্ডা এবংসার্জারিঅর্থ হাতের কাজ।  ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপিও বলা হয়।

বায়োমেট্রিক্স কী?

বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যা দ্বারা কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত  বৈশিষ্ট্যের  উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়।

বায়োইনফরমেটিক্স কী?

বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে যে সব ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো  ডিএনএ, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী?

কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশন (genetic modification/manipulation-GM) বলা হয়।

ন্যানো টেকনোলজি কী?

পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞানকে ন্যানো টেকনোলজি বলে।

প্লেজিয়ারিজম কী?

কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোন সাহিত্য, গবেষণা বা সম্পাদনা কর্ম হুবহু নকল বা আংশিক পরিবর্তন করে নিজের নামে প্রকাশ করাই হল প্লেজিয়ারিজম।

ফিশিং(Phishing) কী?

ইন্টারনেট ব্যবস্থায় কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট সেজে প্রতারণার মাধ্যমে কারো কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ব্যবহারকারী নাম পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করাকে ফিশিং বলে। প্রতারক তাদের শিকারকে কোনোভাবে ধোঁকা দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। ওয়েবসাইটটি সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর ইমেইল, ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ডের আসল ওয়েবসাইটের চেহারা নকল করে থাকে। ব্যবহারকারীরা সেটাকে আসল ওয়েবসাইট ভেবে নিজের তথ্য প্রদান করলে সেই তথ্য প্রতারকদের হাতে চলে যায়।

ভিশিং(Vishing) কী?

মোবাইল, টেলিফোন, ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন ফোন বা অডিও ব্যবহার করে ফিশিং করাকে ভিশিং বা ভয়েস ফিশিং বলা হয়। যেমনঃ ফোনে লটারী বিজয়ের কথা বলে এবং টাকা পাঠানোর কথা বলে ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া।

স্পুফিং কী?

স্পুফিং শব্দের অর্থ হলো প্রতারনা করা, ধোঁকা দেওয়া। নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির ক্ষেত্রে স্পুফিং হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে কোন ব্যক্তি বা কোন একটি প্রোগ্রাম মিথ্যা বা ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে নেটওয়াকর্কে বিভ্রান্ত করে এবং এর সিকিউরিটি সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে অনৈতিকভাবে সুবিধা আদায় করে।

হ্যাকিং কী?

সাধারণত হ্যাকিং একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কেউ কোন বৈধ অনুমতি ব্যতীত কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। যারা হ্যাকিং করে তাদেরকে হ্যাকার বলা হয়।

ডিজিটাল কনভারজেন্স কী?

স্প্যামিং কী?

-মেইল একাউন্টে প্রায়ই কিছু কিছু অচেনা অপ্রয়োজনীয় -মেইল পাওয়া যায় যা আমাদের বিরক্তি ঘটায়। এই ধরণের -মেইলকে সাধারণত স্প্যাম মেইল বলে। যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট  কোন একটি ইমেইল অ্যাড্রেসে শতশত এমনকি লক্ষ লক্ষ মেইল প্রেরণের মাধ্যমে সার্ভারকে ব্যস্ত বা সার্ভারের পারফর্মেন্সের ক্ষতি করে বা মেমোরি দখল করে, তখন এই পদ্ধতিকে স্প্যামিং বলে।

সাইবারক্রাইম কী?

ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে যে সকল কম্পিউটার ক্রাইম সংঘটিত হয় তাদেরকে সাইবার ক্রাইম বলে।

প্রথম অধ্যায়: অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তরসমূহ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মানুষ কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি যন্ত্রের মাধ্যমে ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হয়ে ভার্চুয়াল কমিউনিটি তৈরি করে এবং ছবি , ভিডিও বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে থাকে। এছাড়া এসকল মাধ্যমগুলিতে মানুষ স্বাধীনভাবে মতামতও প্রকাশ করতে পারছে। অতীতে সামাজিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি যার কারনে বিশ্ব সাহিত্যের বড় একটা অংশ দখল করে আছে পত্র সাহিত্য। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের জন্য বিশ্বগ্রামের নাগরিকরা ব্যবহার করে Facebook, Twitter ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট। বিশ্বগ্রাম নাগরিকের  সামাজিক যোগাযোগের সফল মাধ্যমই হল ইন্টারনেট যুক্ত একটি কম্পিউটার

 

তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম-ব্যাখ্যা কর।

বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যেমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে। মার্শাল ম্যাকলুহান হচ্ছেন বিশ্বগ্রামের জনক। বিশ্বগ্রামের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করেও প্রত্যেকেই একে অপরের সাথে সহজেই খুব দ্রুত যোগাযোগ করতে পারে। যা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া সম্ভব নয়। তাই বলা যায়- তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম।

ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে পৃথিবী কীভাবে হাতের মুঠোয় এসেছে?-ব্যাখ্যা কর।

 

ইন্টারনেটকে বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড বলা হয় কেন?-ব্যাখ্যা কর।

বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষ একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যেমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে। বিশ্বগ্রামের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করেও প্রত্যেকেই একে অপরের সাথে সহজেই খুব দ্রুত যোগাযোগ করতে পারে। এই যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল কানেক্টিভিটি বা ইন্টেরনেট। কানেক্টিভিটি বা ইন্টেরনেট ব্যতীত সহজেই যোগাযোগ সম্ভব না। তাই ইন্টারনেটকে বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড বলা হয়।

বিশ্বগ্রাম হচ্ছে ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবস্থা- ব্যাখ্যা কর।

 

শিক্ষাক্ষেত্রে অনলাইন লাইব্রেরীর ভূমিকা বুঝিয়ে লিখ।

অনলাইন লাইব্রেরী বলতে এমন সব ওয়েবসাইটকে বুঝায় যেখানে সকল বইয়ের সমাহার থাকে এবং যেখান থেকে একজন ব্যবহারকারী যেকোন সময় যেকোন বই বিনামূল্যে বা টাকার বিনিময়ে পড়তে পারে। ফলে একজন পাঠকের বই পড়ার জন্য নির্দিস্ট কোন স্থানে যেতে হয় না এমনকি টাকাও খরচ করতে হয় না। অনলাইন লাইব্রেরীর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল- একটি বই বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে যেকোন সংখ্যক পাঠক যেকোন সময় একসাথে পড়তে পারে।

 

টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা-বুঝিয়ে লিখ।

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে কোন ভৌগলিক ভিন্ন দূরত্বে অবস্থানরত রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক , রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়। এই  প্রযুক্তির সাহায্যে মানুষ এক দেশে অবস্থান করে ভিন্ন কোন ভৌগলিক দুরত্বে অবস্থানরত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা নিতে পারে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বাংলাদেশের নাগরিকেরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। অর্থাৎ টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা যার সাহায্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়েও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের রোগীরা ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবহার করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিকট হতে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করতে পারে।

ঘরে বসে ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়’–ব্যাখ্যা কর।

 

-কমার্স পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়কে কিভাবে সহজ করেছে? ব্যাখ্যা কর।

বিশ্বগ্রাম ধারণায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যপক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ক্রেতা-বিক্রেতাকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে কিংবা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হয় না। ক্রেতা বা ভোক্তা বাসায় বসে ইন্টারনেট এর সাহায্যে কোন -কমার্স ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বা সেবা পছন্দ করে ক্রয় করেতে পারছে এবং অনলাইনে মূল্য পরিশোধ করতে পারছে, যাকে অন-লাইন শপিং বলা হয়। ইলেকট্রনিক কমার্স বা -কমার্স একটি বাণিজ্য ক্ষেত্র যেখানে ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় বা লেনদেন হয়ে থাকে। -কমার্সের প্রধানতম সুবিধা হল সময় ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা দূর করে অর্থাৎ ঘরে বসে যেকোন পন্য ক্রয়-বিক্রয় করা যায় এবং ক্রয়-বিক্রয়কৃত পন্যের মূল্য পরিশোধ করা যায়।

আজকাল ঘরে বসে কেনাকাটা অধিকতর সুবিধাজনক-ব্যাখ্যা কর।

 

ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করা যায়-ব্যাখ্যা কর।

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে দেশ এবং বিদেশে ব্যপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং  কর্মসংস্থানের নতুন দার উন্মোচন করেছে। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে দেশে বসে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে, স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোন একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হয়। তারপর ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন জব প্ল্যাটফর্মে (upwork.com, fiverr.com, freelancer.com) প্রোজেক্ট ভিত্তিক কাজের আবেদন করে কাজ পাওয়া যায়। এভাবে দেশ বা দেশের বাইরের কোন কোম্পানি বা ব্যক্তির কাজ ঘরে বসেই করা যায় এবং অর্থ উপার্জন করা যায়।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য এখন আর বিদেশে যাওয়ার দরকার নেই- ব্যাখ্যা কর।

 

আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবলের জন্য উপার্জনের ক্ষেত্রে সহজ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে- ব্যাখ্যা কর।

আইসিটি শিক্ষায় শিক্ষিত যেকোন ব্যক্তি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে সহজেই উপার্জন করতে পারছে। কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি না করে, স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করাকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। কোন ব্যক্তি যদি আইসিটি এর বিভিন্ন শাখা যেমন- গ্রাফিক্স, ওয়েব ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি এর যেকোন একটি বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করে। তাহলে ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারবে।

 

বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির ক্ষেত্রেবাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুয়ে দেখা সম্ভবউক্তিটি যথাযথ। হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার সমন্বয়ে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক বা ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক রুপায়ন হল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এই প্রযুক্তিতে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য বাস্তব বলে মনে হয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে বাস্তবে নয় ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দায় যেমন গাড়ি চালানো অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। ঠিক তেমনি বাস্তবে অবস্থান করে চাঁদে যাওয়ার মত কল্পনাকেও ছুঁয়ে দেখা যায়।

 

বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব-বুঝিয়ে লেখ।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার সমন্বয়ে কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তবভিত্তিক বা ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক রুপায়ন হল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এই প্রযুক্তিতে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য বাস্তব বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে ড্রাইভিং প্রশিক্ষনের জন্য চালককে একটি নির্দিষ্ট আসনে বসতে হয়। চালকের মাথায় পরিহিত হেড মাউন্টেড ডিসপ্লের সাহায্যে কম্পিউটার দ্বারা সৃষ্ট যানবাহনের অভ্যন্তরীন অংশ এবং আশপাশের রাস্তায় পরিবেশের একটি মডেল দেখানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি হেড ট্র্যাকিং সিস্টেম। ফলে ব্যবহারকারী যানবাহনের অভ্যন্তরীন বাহ্যিক অংশের ৩৬০ ডিগ্রী দর্শন লাভ করেন এবং কম্পিউটার সৃষ্ট পরিবেশে মগ্ন থেকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ লাভ করেন। অতএব, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে প্রাক ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব।

 

যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে-ব্যাখ্যা কর।

স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করার অন্যতম যন্ত্র হচ্ছে রোবট।  রোবট হলো এক ধরনের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা। যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ইলেকট্রনিক সার্কিট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় বা আধা-স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা যন্ত্রমানব যা মানুষের মতো অনেক দুঃসাধ্য কাজ করতে পারে। মানুষ যেমন চিন্তাভাবনা করে স্বয়ংক্রিয় ভাবে কাজ করতে পারে ঠিক তেমনি রোবটও চিন্তাভাবনা করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। তাই বলা যায়- যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে।

 

ঝুকিপুর্ণ কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর।

ঝুকিপুর্ণ কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো রোবট। রোবট হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এক ধরণের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা কোন ব্যক্তির নির্দেশে কাজ করতে পারে। এটি তৈরী হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিতে। যা মানুষ কিংবা বিভিন্ন বুদ্ধিমান প্রাণীর মতো কাজ করতে পারে। রোবট মূলত সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত যা সুনির্দিষ্ট কোন কাজ দ্রুত নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে পারে। রোবট বিরতিহীনভাবে কাজ করতে পারে এবং রোবট যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ বা অস্বাস্থ্যকর স্থানে কাজ করতে পারে।

 

ঝুকিপূর্ণ কাজে যন্ত্র শ্রমিক ব্যবহার সুবিধাজনক-ব্যাখ্যা কর।

রোবটে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা-বুঝিয়ে লেখ।

চিকিৎসা সেবায় আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স কীভাবে সম্পর্কিত? বুঝিয়ে লিখ।

কম্পিউটার একটি প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র-বুঝিয়ে লেখ।

 

ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব-বুঝিয়ে লেখ।

ক্রায়োসার্জারি হল এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যাধিক শীতল  তাপমাত্রা প্রয়োগ করে শরীরের অস্বাভাবিক বা রোগাক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস করার মাধ্যমে ত্বকের বিভিন্ন ক্যান্সার সহ আরো নানান জটিল রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। গ্রিক শব্দক্রায়োঅর্থ বরফের মতো ঠাণ্ডা এবংসার্জারিঅর্থ হাতের কাজ।  ক্রায়োসার্জারিকে অনেক সময় ক্রায়োথেরাপিও বলা হয়। এই পদ্ধতিতে ক্রায়োপ্রোব দিয়ে আক্রান্ত টিস্যুতে তরল নাইট্রোজেন বা আর্গন গ্যাস সহ অন্যান্য ক্রায়োজনিক এজেন্ট পৃথক পৃথক ভাবে প্রবেশ করিয়ে কোষের তাপমাত্রায় -৪১ আনা হয়। ফলে আক্রান্ত টিস্যু জমে বরফ খন্ডে পরিণত হলে এতে রক্ত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে টিস্যুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর পুনরায় স্থানে ক্রায়োপ্রোবের সাহায্যে হিলিয়াম গ্যাস প্রবেশ করিয়ে তাপমাত্রাকে ২০ থেকে ৩০ পর্যন্ত উঠিয়ে টিস্যুটিকে গলিয়ে ধ্বংস করা হয়। ক্রায়োসার্জারির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা হল এতে কাটা-ছেঁড়া করা তথা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না। এজন্যই ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন আপারেশন সম্ভব।

 

রক্তক্ষরণ ছাড়াই অপারেশন সম্ভব ব্যাখ্যা কর।

নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।

শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব’–ব্যাখ্যা কর।

 

ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

ব্যক্তি সনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি হলো বায়োমেট্রিক্স। বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যার দ্বারা কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত  বৈশিষ্ট্যের  উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য বায়োমেট্রিক্স যন্ত্রের সাহায্যে ইনপুট নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার কম্পিউটারে জমা রাখা হয় যা পরবর্তিতে দেওয়া ইনপুটের সাথে মিলিয়ে সনাক্ত করে থাকে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বা অফিসের কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের উপস্থিতির হিসাব রাখা হয়। এছাড়া বিভিন্ন যন্ত্র বা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

 

বায়োমেট্রিক্সএকটি আচরণীক বৈশিষ্ট্য নির্ভর প্রযুক্তি- ব্যাখ্যা কর।

বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যার দ্বারা কোন ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়। এই প্রযুক্তিতে আচরণগত বৈশিষ্ট্য যেমন- ভয়েস রিকগনিশন, সিগনেচার ভেরিফিকেশন টাইপিং কীস্ট্রোক এর উপর ভিত্তি করে একজন ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা যায়। তাই বলা যায়- বায়োমেট্রিক্স একটি আচরণীক বৈশিষ্ট্য নির্ভর প্রযুক্তি।

বায়োমেট্রিক্সটেকনোলজি ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধাগুলো কী কী?

অফিসের নিরাপত্তার জন্য বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার সুবিধাজনক-ব্যাখ্যা কর।

 

বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ডেটা কী? ব্যাখ্যা কর।

বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিওরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করা হয়। বায়োইনফরমেটিক্সে যে সব ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলো  ডিএনএ, জিন, এমিনো অ্যাসিড এবং নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।

বায়োইনফরমেটিক্স এর সুবিধা অসুবিধা লিখ।

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কৃষিক্ষেত্রে কী প্রভাব রাখে?ব্যাখ্যা কর।

কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশনও  বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে কৃষিতে উৎপাদনের লক্ষ্য চারটিঃ

·         ১। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা

·         ২। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা

·         ৩। পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা

·         ৪। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো

 

কোন প্রযুক্তি ব্যবহারে পাটের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

পাটের জীবন রহস্য উন্মোচিত হয়েছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে। কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-কে জেনেটিক মডিফিকেশনও  বলা হয়। এই প্রযুক্তির সাহায্যে শস্যের গুনাগুণ বৃদ্ধি করা যায়। নতুন জাত তৈরি করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করা যায়।

 

তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় ডায়াবেটিস রোগীরা উপকৃত হচ্ছে- ব্যাখ্যা কর।

কোন জীব থেকে একটি নির্দিষ্ট জিন বহনকারী DNA খন্ড পৃথক করে ভিন্ন একটি জীবে স্থানান্তরের কৌশলকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিকম্বিনেন্ট DNA প্রযুক্তির মাধ্যমে মানবদেহের জন্য ইনসুলিন তৈরি করা হয় যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী শরীরে গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। তাই বলা যায়- তথ্য প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতায় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহারে ডায়াবেটিস রোগীরা উপকৃত হচ্ছে।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী ভাবে মানুষকে সহায়ক? ব্যাখ্যা কর।

 

আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

আণবিক পর্যায়ের গবেষণা প্রযুক্তিটি হচ্ছে ন্যানোটেকনোলজি। পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর প্রযুক্তিকে ন্যানোটেকনোলজি বলে। অর্থাৎ ন্যানো প্রযুক্তির সাহায্যে ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপাদান দিয়ে কাঙ্খিত কোনো বস্তুকে এতটাই ক্ষুদ্র করে তৈরি করা যায় যে, এর থেকে আর ক্ষুদ্র করা সম্ভব নয়। ন্যানোটেকনোলজির ফলে সকল যন্ত্রের আকার ছোট হয়েছে, উৎপাদন ব্যয়, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে মডার্ন লাইফকে সাশ্রয়ী গতিশীল করছে। এছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স শক্তি উৎপাদন সহ বহুক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারছে।

 

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর।

ন্যানোটেকনোলজি মডার্ন লাইফকে করেছে সাশ্রয়ী গতিশীল-ব্যাখ্যা কর।

 

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতা ব্যাখ্যা কর।

নৈতিকতা হচ্ছে মানুষের কাজ কর্ম আচার-ব্যবহারের এমন একটি মূলনীতি যার উপর ভিত্তি করে মানুষ একটি কাজের ভালো বা মন্দের দিক বিচার বিশ্লেষণ করতে পারে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি ব্যপকভাবে নেতিবাচক প্রভাবও বিস্তার করা শুরু করেছে। এর ফলে হ্যাকিং, স্প্যামিং, সাইবারক্রাইম এর মত অপরাধ কর্মকান্ড সংঘঠিত হছে যা তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতা বিরোধী। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেতে সবার সচেতন থাকতে হবে যাতে কারো দ্বারা অন্য ব্যক্তির ক্ষতি সাধন না হয় এবং পাশাপাশি সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি না হুয়।

তথ্য প্রযুক্তিতে সামাজিক অবক্ষয়ের ঝুঁকি রয়েছে-ব্যাখ্যা কর।

 

হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড”– ব্যাখ্যা কর।

সাধারণত হ্যাকিং একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কেউ অনুমতি ব্যতীত কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে এবং সিস্টেমের ক্ষতিসাধন, ডেটা চুরি, ডেটা বিকৃতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে থাকে। যেহেতু অনুমতি ব্যতীত অন্যের সিস্টেমে প্রবেশ, ডেটা চুরি এগুলো অপরাধমূলক কর্মকান্ড এবং নৈতিকতা বিরোধী তাই বলা যায় হ্যাকিং একটি নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড।

 

সাইবার ক্রাইম প্রযুক্তির জন্য হুমকি-ব্যাখ্যা কর।

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বিশ্বগ্রাম

Narration For HSC Students

English Model Question for Class 5